আন্তজার্তিক সংবাদ

ইউরোপে গলদা চিংড়ি রপ্তানি নভেম্বরে আবার শুরুর আশা

ছয় মাস বন্ধ থাকার পর আগামী নভেম্বর থেকে ইউরোপের বাজারে গলদা চিংড়ি রপ্তানি আবার শুরু করার আশা করেছেন রপ্তানিকারক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে নাইট্রোফুরানের উপস্থিতি এড়াতে মাছের খাবারের মান সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য আইন প্রণয়ণের আহ্বান জানিয়েছেন তারা। বাংলাদেশের গলদা চিংড়িতে ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিক (নাইট্রোফুরান) সনাক্ত হওয়ার পর গত ১৯ মে থেকে ৬ মাসের জন্য ইউরোপিয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে গলদা চিংড়ি রপ্তানি বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশ। তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে রপ্তানি চলছে। বাংলাদেশ শ্রিম্প অ্যান্ড ফিশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহমুদুল হক বলেন, “আমরা বিদেশি বিশেষজ্ঞ এনেছিলাম। কেন নাইট্রোফুরান আসছে তা সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করছি, আগামী নভেম্বর মাস থেকে ইউরোপের বাজারে আবার গলদা চিংড়ি রপ্তানি শুরু করতে পারব আমরা।” তিনি বলেন, “চিংড়ির খাবার থেকে নাইট্রোফুরান এসেছে বলে আমরা সন্দেহ করছি। আবার ওষুধের মাধ্যমেও আসতে পারে। এছাড়া অন্যান্য মাধ্যমেও নাইট্রোফুরান আসতে পারে কী না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ৪৫ কোটি ৪৪ লাখ মার্কিন ডলারের হিমায়িত খাদ্য রপ্তানি হয়, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশ কম ছিল। আর এ রপ্তানির পরিমাণ ছিল আগের বছরের তুলনায় ১৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ কম। রপ্তানি হওয়া হিমায়িত খাদ্যের অধিকাংশই চিংড়ি।বাংলাদেশ হিমায়িত খাদ্য রপ্তানিকারক সমিতির সহ-সভাপতি মাকসুদুর রহমান জানান, বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা চিংড়ির ৬৫ ভাগ নোনা পানির বাগদা এবং বাকিটা স্বাদু পানির গলদা। রপ্তানি করা চিংড়ির বেশিরভাগই যায় ইউরোপে। গত বছরের নভেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত বেলজিয়ামে পাঠানো কয়েকটি চালানের চিংড়িতে নাইট্রোফুরানের উপস্থিতি ধরা পড়ে। তবে বেলজিয়ামের করা পরীক্ষা নিয়ে সংশয় রয়েছে রপ্তানিকারকদের। তাই বাংলাদেশেই পরীক্ষার উন্নত যন্ত্র কেনার জন্য সরকারকে পরামর্শ দেন তারা। এ বিষয়ে পদক্ষেপের কথা জানিয়ে গলদার নাইট্রোফুরান প্রতিরোধে গঠিত ন্যাশনাল অ্যাকশন কমিটির প্রধান এবং মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (মৎস্য) পরীক্ষিত দত্ত চৌধুরী বলেন, “বিদেশি বিশেষজ্ঞ দিয়ে আমাদের নাইট্রোফুরান পরীক্ষার মেশিন যুগোপযোগী করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদও একটি নতুন মেশিন কিনেছে।” রপ্তানিকারকরা জানায়, কয়েকবছর আগে মূলত বাগদা চিংড়ি রপ্তানি হলেও গলদা চিংড়ির চাষ ক্রমেই বাড়ছে। বিশেষ করে ময়মনসিংহ, জামালপুর, সুনামগঞ্জ, পটুয়াখালী, বরিশাল ও যশোরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গলদার চাষ জনপ্রিয় হচ্ছে। দেশে প্রায় ২ লাখ হেক্টর জায়গায় বাগদা ও গলদা চিংড়ি চাষ হচ্ছে বলেও জানান তারা।তবে চিংড়ির খাবারের মান নিয়ন্ত্রণের কোনও উপায় না থাকায় এ শিল্প হুমকির মুখে রয়েছে জানিয়ে মাকসুদুর রহমান বলেন, “খাবার বা অন্য কোনোভাবে নাইট্রোফুরান যেন চিংড়ি শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে না পারে সে বিষয়ে দ্রুত আইন করতে হবে।” গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ‘মৎস খাদ্য ও পশু খাদ্য অধ্যাদেশ ২০০৮’ জারি করা হয়েছিল। কিন্ত বর্তমান সরকার তা অনুমোদন দেয়নি। তবে এ সংক্রান্ত নতুন আইন করা হবে বলে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
 

Copyright © 2009 by Your News, Your Site and Mirror Of Lakshmipur,