পৃথিবীর বুক থেকে চির বিদায় নিয়ে চলে গেলেন ড. ওয়াজেদ মিয়া


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ও বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া আর নেই। তিনি শনিবার বিকেলে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নানিল্লাহি...রাজিউন)। তার চিকিৎসক অধ্যাপক ডাঃ সানোয়ার হোসেন জানান ড. ওয়াজেদ মিয়া বিকাল ৪টা ২৫ মিনিটে ইন্তেকাল করেছেন।রোববার সকাল দশটা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে তার প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তার গ্রামের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হবে।সেখানে দ্বিতীয় জানাযার পর তাকে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে। ড. ওয়াজেদ মিয়াকে ৭ এপ্রিল রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শারীরিক পরিস্থিতি গুরুতর অবনতি ঘটলে বুধবার সকাল১১টায় তাকে প্রথমে আইসিইউতে নেয়া হয়।পরে সিটি আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। বুধবার বিকেলে স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়াকে দেখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতালে যান । এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার ছোট বোন শেখ রেহানাও ছিলেন। রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান বৃহস্পতিবার রাতে ড. ওয়াজেদ মিয়াকে দেখতে স্কয়ার হাসপাতালে আসেন। রাষ্ট্রপতি প্রায় পনের মিনিট তার শয্যার পাশে অবস্থান করেন। বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সাথে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৬৮ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। শোকসন্তপ্ত হাসিনার পাশে খালেদা :: প্রয়াত ড. ওয়াজেদ মিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রধান বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়া শনিবার রাতে ধানমণ্ডির সুধা সদনে যান।খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেসান্ত্বনা দেন।তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার স্বামীর মরদেহের কাছে যান এবং শ্রদ্ধা জানান। খালেদা জিয়া সুধাসদনে ২৫ মিনিট থাকার পর রাত সোয়া নয়টায় চলে যান। খালেদা জিয়ার কিছু সময় পর বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদ সুদা সদনে গিয়েছিলেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বামীর লাশ হাসপাতালের হিমঘরে পাঠানোর ঘন্টাখানেক পর রাত সাড়ে দশটায় তার সরকারি বাসভবন যমুনায় ফিরে যান।পরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়া সান্ত্বনা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি কথাও বলেছেন।দুই নেত্রীর এ দেখা-সাক্ষাৎ তথা একে অপরের প্রতি সমবেদনা প্রকাশদেশের রাজনীতিতে একটি ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। খন্দকার মোশাররফ আরো বলেন, "আমরা প্রার্থনা করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই শোক কাটিয়ে উঠবেন।" শনিবার রাত ৮টা ৫০ মিনিটে খালেদা জিয়া দলীয় সিনিয়র নেতাদের নিয়ে সুধা সদনে যান। তার সঙ্গে ছিলেন দলের মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন, ড. আর এ গণি, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ও ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, যুগ্ম মহাসচিব নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আ স ম হান্নান শাহ, সহসভাপতি এম কে আনোয়ার। দলের সহ-সভাপতি এম কে আনোয়ার বলেন, "খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীকে সান্তনা দেন। যতক্ষণ বিরোধী দলীয় নেতা সুধা সদনে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর পাশেই তিনি বসে আলাপ করেছেন।" খালেদা জিয়া এই প্রথম তার প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বাসায় গেলেন। খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার মধ্যে দেখা-সাক্ষাত অতি বিরল ঘটনা । সর্বশেষ তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে পরস্পরের সঙ্গে হাস্যোজ্জল ভঙ্গিতে কুশল বিনিময় ছাড়াও কথাবার্তা বলেন যা দেশে ব্যাপক আলোড়ন জাগায়।
 

Copyright © 2009 by Your News, Your Site and Mirror Of Lakshmipur,