রামগতি ও কমলনগরের সংবাদ

রামগতিতে জলাবদ্ধতায় তিন ইউনিয়নের ১০ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ব্যাহত


ভারী বৃষ্টির কারণে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। কয়েকটি খাল সংস্কার না করায় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধের সরু স্লুইস গেট দিয়ে পানি সরতে না পারায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ওই এলাকার প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। অনেক জমির আউশ ধান ও আমনের বীজতলা ডুবে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা জানান, ৩৫ বছর ধরে মৌসুমি জলাবদ্ধতার কারণে তাঁরা ফসলহানির শিকার হচ্ছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের চর আফজল, চর হাজারি, দক্ষিণ টুমচর, চর রমিজ ইউনিয়নের চর আফজল (আংশিক), চর মেহার ও চর আলগী ইউনিয়নের চর নেয়ামত, চর হাসান হোসেন, চর সেকান্দর এলাকার বিস্তীর্ণ জমির আউশ ধান ও আমনের বীজতলা পানিতে ডুবে আছে। ওই এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকেরা আমন ধানের চারাও রোপণ করতে পারছেন না।
চর আফজল গ্রামের কৃষক দেলোয়ার হোসেন জানান, জলাবদ্ধতার কারণে এ বছর তাঁর দুই একর জমির আউশ ধান নষ্ট হয়েছে। এ ছাড়া দেড় মণ আমন ধানের বীজতলা নষ্ট হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে চর হাজারির কামাল উদ্দিন, চর মেহারের আলাউদ্দিন ও চর নেয়ামতের মোশারফ হোসেনসহ ওই সব এলাকার কৃষকেরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। সূত্র: প্রথম আলো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুছ সোবহান বলেন, ভারী বর্ষণের কারণে ওই এলাকায় মৌসুমি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ বছর সেখানে আউশ ধানের সামান্য ক্ষতি হয়েছে। তবে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আমন চাষ বিলম্বিত হচ্ছে। তা ছাড়া জমিতে বেশি পানি থাকায় ওই এলাকায় কৃষকেরা উফশী আমন চাষ করতে পারছেন না। তিনি জানান, ওই এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল সংস্কারের একটি প্রস্তাব গত মাসে জেলা কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে বর্ষা মৌসুমে ওই তিন ইউনিয়নের
দুই হাজার হেক্টর জমির স্থায়ী জলাবদ্ধতা এবং আট হাজার হেক্টরের অস্থায়ী জলাবদ্ধতা দুর হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা জানান, খাল দখল করে বসতবাড়ি নির্মাণ ও নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় খালগুলো আর পানি নিষ্ককাশনে তেমন কাজে আসছে না। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, চর রমিজ ইউনিয়নের গোপ্তার খাল ও বড়মুল্লার খালের বিভিন্ন স্থানে ভরাট হয়ে যাওয়ায় খালগুলো দিয়ে ঠিকমতো পানি নিষ্ককাশন হচ্ছে না। চর রমিজ ও চরগাজী ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত জারিরদোনা খালটিও বিভিন্ন স্থানে ভরাট হয়ে গেছে। আগে চর রমিজ ইউনিয়নের পাটোয়ারী খাল ও লক্ষ্মীপুর খালের সঙ্গে জারিরদোনা খালের সংযোগ ছিল । কিন্তু চর আফজল এলাকায় খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্ককাশন হচ্ছে না। ফলে পাটোয়ারী খাল ও লক্ষ্মীপুর খালের স্লুইস গেটগুলো কোনো কাজে আসছে না। গোপ্তার খালের কারিরগোজা এলাকায় স্থাপিত অপ্রশস্ত স্লুইস গেট দিয়ে পানি ঠিকমতো সরতে পারছে না।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী নাছির উদ্দিন জানান, চরগাজী ও চর রমিজ ইউনিয়নের জারিরদোনা খালসহ গোপ্তার খাল ও বরমুল্লার খাল সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডে একাধিকবার প্রস্তাব পাঠানো হলেও বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।


 

Copyright © 2009 by Your News, Your Site and Mirror Of Lakshmipur,