
লক্ষ্মীপুর ওয়েব নিউজ : লক্ষ্মীপুরসহ দেশের উপকূলীয় ১৩ জেলায় আগামী দুবছরে নির্মাণ করা হবে ৮১৬টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র বা সাইকোন শেল্টার।বৃহৎএই প্রকল্পের কাজ আসন্ন নতুন অর্থবছরে শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের শিকার উপকূলীয় জেলাসমূহে বর্তমানে প্রায় আড়াই হাজার ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। জনসংখ্যার তুলনায় এ সংখ্যা নিতান্তই অপ্রতুল।ফলে দুর্যোগকালে উপকূলীয় জনপদের লাখ লাখ মানুষের জীবন ও সম্পদ অরতি হয়ে পড়ে।এ বাস্তবতায় বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় উপকূলীয় সাতীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় জরুরিভিত্তিতে ৮১৬টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ।এজন্য ব্যয় ধরা হয় প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা।জানা গেছে, নির্মিতব্য এসব সাইকোন শেল্টার দুর্যোগের সময় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের পাশাপাশি স্বাভাবিক সময়ে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কমিউনিটি সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হবে।ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিার অবকাঠামো খাতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।সাইকোন শেল্টারগুলোকে এ, বি, সি ও ডি এই চার ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে।এ ও সি ক্যাটাগরির সাইকোন শেল্টার চারতলাবিশিষ্ট এবং বি ও ডি ক্যাটাগরিরগুলো তিনতলাবিশিষ্ট হবে।নিচতলা উন্মুক্ত থাকবে।দ্বিতীয় তলা গবাদিপশু রাখার জন্য এবং এর ওপরের তলায় অবস্থান করবেন দুর্যোগের শিকার মানুষজন।প্রত্যেক তলায় আশ্রয় নিতে পারবেন ৮৫০ জন।প্রতিটি এ ক্যাটাগরির সাইকোন শেল্টারের নির্মাণ ব্যয় ২ কোটি ৯ লাখ টাকা, বি ক্যাটাগরির ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, সি ক্যাটাগরির ১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা এবং ডি ক্যাটাগরির ১ কোটি ৪৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ধরা হয়েছে ।সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় যেসব এলাকায় এসব আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে সেগুলো হচ্ছে সাতীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলায় ২৬টি, খুলনা জেলার দাকোপ ও কয়রা উপজেলায় ২৭টি, বাগেরহাট জেলার শরণখোলা ও মংলা উপজেলায় ৩৫টি, বরগুনা জেলার পাথরঘাটা, বরগুনা সদর, আমতলী, বেতাগী ও বামনা উপজেলায় ২০৪টি, পটুয়াখালী জেলার বাউফল, গলাচিপা ও কলাপাড়া উপজেলায় ১০১টি, পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলায় ২১টি, ভোলা জেলার সদর, বোরহানউদ্দিন, লালমোহন, চরফ্যাশন, মনপুরা, তজুমুদ্দিন ও দৌলতখান উপজেলায় ৮২টি, বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ ও বরিশাল সদর উপজেলায় ৭টি, ল্মীপুর জেলার সদর, রামগতি ও রায়পুর উপজেলায় ২৭টি, নোয়াখালী জেলার হাতিয়া, নোয়াখালী সদর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ৩১টি, ফেনী জেলার সোনাগাজীতে ৮টি, চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া, সন্দ্বীপ, সীতাকুন্ড, আনোয়ারা ও বাঁশখালী উপজেলায় ৬১টি এবং কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া, মহেশখালী, চকরিয়া, কক্সবাজার সদর, রামু, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় ১৮৬টি। ২০১১ সালের জুন মাসের মধ্যে এগুলোর নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, গত বছরের ৩ জুলাই খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের স্মারক (নং- খাদুব্যব/পঅসা/প্রকৌশল-১৫/স॥ শে./২০০৮/১২৪) মূলে ১৩ জেলার সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ৮১৬টি সাইকোন শেল্টার নির্মাণের সম্ভাব্য স্থান নির্ধারণ করে তার তালিকা গ্রহণ করা হয়। স্থান নির্ধারণ করার েেত্র যেখানে কোনো সাইকোন শেল্টার নেই অথবা আশ্রয় নেয়ার মতো কোনো স্থাপনা নেই সেসব এলাকাকেই বিবেচনা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।এ ব্যাপারে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক নিতাই চন্দ্র বলেন,স্থান নির্বাচন হয়ে গেছে।চূড়ান্ত মূল্যায়নের জন্য প্রস্তাবনাটি ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।চূড়ান্ত মূল্যায়নের পর প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের জন্য প্রস্তাবনাটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে।প্রকল্পটি সময়মতো বাস্তবায়ন করতে হলে দাতাগোষ্ঠীর অর্থ সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।৮ মে ২০০৯ইং- লক্ষ্মীপুর