পুলিশ, ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশের মান্থলী আয় সাড়ে তিন লাখ টাকা লক্ষ্মীপুরের ৪ শতাধিক টেম্পু, পিকাপ,বেবীর লাইসেন্স,ফিটনেস ও রুট ফারমিট নেই


স্টাফ রিপোর্টার ঃ লক্ষ্মীপুর জেলার পাঁচটি উপজেলার বিভিন্ন রুটেরুট ফারমিট, ফিটনেস ও লাইসেন্স নবায়ন বিহীন ভাবেই চলছে ৪ শতাধিক টেম্পু ও শতাধিক টেক্সী, দেড়শতাধিক যাত্রীবাহী পিকাপ। সংশ্লিষ্ট থানা, তদন্ত কেন্দ্র,হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশকে নির্ধারিত হারে মাসোহারা দিয়ে নির্বিঘ্নে এসব টেম্পু ও বেবী টেক্সী চলাচল করায় মালিকরা লাইসেন্স নবায়ন ও ফিটনেস সনদ সংগ্রহের প্রয়োজনীতা আছে বলে মনে করেন না। সংশ্লীষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানাগেছে। ফলে প্রতিবছর সরকার এসব টেম্পু ও বেবী টেক্সী থেকে কয়েক লাখ টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অপর একটি সূত্র জানায় বর্তমানে এ জেলায় পাঁচ শতাধিক সিএনজি টেক্সী, শতাধিক বেবী টেক্সী, চার শতাধিক টেম্পু এবং প্রায় দেড় শতাধিক যাত্রী পরিবহনে নিয়োজিত পিকাপ এর অধিকাংশ ড্রাইভারের বৈধ লাইসেন্স নেই। এক শ্রেণীর দালালের মাধ্যমে তারা নকল লাইসেন্স সংগ্রহ করে নির্বিঘ্নেই চালিয়ে যাচ্ছে যানবাহন। ফলে আনাড়ি হাতে যানবাহন চালাতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা ও প্রাণ হানির ঘটনা ঘটছে। লক্ষ্মীপুরের বিআরটি এর অফিস সূত্রে জানা যায প্রতিটি টেম্পুর লাইসেন্স ফিটনেস সনদ ও রুট পারমিট সনদ গ্রহণে চারহাজার সাতশত নব্বই টাকা, ,বেবী টেক্সীর লাইসেন্স ফিটনেস ও রুট ফারমিটে প্রায় একই পরিমান এবং পিকাপের রুটফারমিট, লাইসেন্স নবায়ন ও ফিটনেসে লাগে সাত হাজার একশত চলি্লশ টাকা এবং হালকা যানবাহন চালনার ড্রাইভিং লাইসেন্স গ্রহণে একহাজার তিনশত টাকা ফি প্রদান করতে হয়। সে হিসেবে টেম্পু, টেক্সী ও পিকাপের লাইসেন্স ও ফিটনেস সনদ গ্রহণ বাবত প্রতিবছর নূন্যতম ৪৫ লাখ টাকা রাজস্ব আয় এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স গ্রহণ বাবত সাড়ে ১২ লাখ টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। উভয় ক্ষেত্র মিলিয়ে বার্ষিক প্রায় ৫৭ লাখ টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। অপর দিকে একটি টেম্পু, টেক্সী মাসে ট্রাফিক পুলিশ কে একশ, হাইওয়ে পুলিশ কে একশ ও ফাঁড়ি পুলিশকে একশ টাকা করে মান্থলী দিতে হচ্ছে। এক হিসাব মোতাবেক লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন ফাঁড়ি, ট্রাফিক ও হাইওয়ে ফাঁড়ি পুলিশ শুধুমাত্র বেবী টেক্সী, টেম্পু ও পিকাপ ও সিএনজি টেক্সী থেকে মাসে মাসোয়ারা বাবত সাড়ে তিন লাখ টাকা আদায় করছে। যার বার্ষিক আদায়ের পরিমান ৪২ লাখ টাকা বলে জানা গেছে। অপর দিকে লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক সংগঠন, মালিক সমিতি সহ বিভিন্ন নামে প্রতিটি গাড়ী থেকে দৈনিক ১শ টাকা করে চাঁদা আদায় করে থাকে। সেই হিসেবে লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন রুটে সিএনজি টেক্সী, টেম্পু, বেবীটেক্সী ও পিকাপ মিলিয়ে চলাচল কারি ১১৫০টি যাত্রী বাহী হালকা যান বাহন থেকে দৈনিক একলাখ ১৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হয়ে থাকে। সে হিসেবে প্রতিমাসে তথাকথিত শ্রমিক সংগঠন ও মালিক সমিতি প্রতি মাসে ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে থাকে। যার বেশীর ভাগ টাকাই ওই সব শ্রমিক ও মালিক সংগঠনের কথিত নেতা, পাতিনেতা পরিচয় দিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও ক্যাডাররা ভাগ বাটোয়ারা করে খায়। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে তখন সেই দলের নেতা, ক্যাডাররা তথা কথিত এই মালিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠন নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। লাইসেন্স নবায়ন ও ফিটনেস সনদ না নেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে একাধিক টেম্পু সিএনজি টেক্সীর মালিক এ প্রতিবেদককে জানান কাগজ পত্র সব আফটুডেট থাকলেও পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশকে মান্থলী দিতে হয়। না থাকলেও দিতে হয়। মান্থলী যখন দিতেই হয় তখন কাগজপত্র নবায়ন করে অতিরিক্ত অর্থ ব্যায়ের প্রয়োজন কি? অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান কাগজপত্র আফটুডেট তখনই করতে মালিকরা আগ্রহী হবেন যখন কাগজপত্র আপটুডেট থাকলে মালিকরা হয়রানি করবেনা। অপর দিকে জেলা বি আর টিএ অফিস জানায় সরকার গাড়ীর কাগজ পত্র নবায়ন তথা আফটুটে করার ফিতে বিশেষ ছাড় দিলেও মালিকরা আগ্রহ দেখাচ্ছেনা। ফলে সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে।
 

Copyright © 2009 by Your News, Your Site and Mirror Of Lakshmipur,