নোয়াখালী টেক্সটাইল চালু হবে কবে?

রায়পুর  প্রতিনিধি : ব্যক্তিমালিকানায় হস্তান্তরের প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর পরও নোয়াখালী টেক্সটাইল মিলটি চালু হয়নি। মালিকপক্ষ নানা অজুহাত দেখিয়ে যাবতীয় মেশিনারি বিক্রি করে দেওয়ায় মিলটি আদৌ চালু হবে কি-না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এদিকে প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান সরেজমিন মিল পরিদর্শন করার আট মাস পেরিয়ে গেলেও মিলটি চালু হওয়া, না হওয়া নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা কাটেনি। নোয়াখালী টেক্সটাইল মিলসহ বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া ৭৪টি শিল্প প্রতিষ্ঠান জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে কী ভূমিকা রাখছে এবং হস্তান্তরিত ওই প্রতিষ্ঠান চুক্তির শর্ত মানছে কি-না তা খতিয়ে দেখছে প্রাইভেটাইজেশন কমিশন।
সরকার ১৯৮৪ সালে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার রাখালিয়ায় ২৬ একর জমির ওপর প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে নোয়াখালী টেক্সটাইল মিলস স্থাপন করে। মিলটি স্থাপনের পর লাভজনক অবস্থা চলতে থাকলেও নিয়ন্ত্রক বিটিএমসির উদাসীনতা ও অব্যাহত কাঁচামাল সংকটের কারণ দেখিয়ে ১৯৯৩ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে বেকার হয়ে পড়েন মিলের ১ হাজার ২০০ শ্রমিক। শ্রমিকদের অব্যাহত দাবির মুখে গত আওয়ামী লীগ সরকার ব্যক্তিমালিকানায় মিলটি চালুর লক্ষ্যে প্রাইভেটাইজেশন বোর্ডের কাছে হস্তান্তর করে। তখন বারবার টেন্ডার আহ্বান করে কাঙ্ক্ষিত দরদাতা না পাওয়ায় মিলটি ব্যক্তিমালিকানায় হস্তান্তর করা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০০৪ সালের ২৬ জুন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে প্রাইভেটাইজেশন বোর্ড নামমাত্র মূল্যে দু'কোটি ৮৬ লাখ টাকায় মিলটি স্থানীয় আলী হায়দার চৌধুরী গং কিনে নেয়। যত দ্রুত সম্ভব টেক্সটাইল মিলটি চালু করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে_ এ শর্তে মিলটি হস্তান্তর করার সময় চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু মালিকপক্ষ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে মিলটি তিন বছর পর্যন্ত চালুর কোনো উদ্যোগ না নিয়ে ২০০৭ সালের মার্চে গোপনে প্রাইভেটাইজেশন বোর্ডের শর্তাবলি উপেক্ষা করে এর যাবতীয় মেশিনারি অন্যত্র বিক্রি করে দেয়। বিষয়টি শ্রমিক ও এলাকাবাসী জানতে পেরে প্রাইভেটাইজেশন বোর্ডে লিখিত অভিযোগ করে।
মালিকপক্ষ চার কোটি ৬০ লাখ টাকায় ঢাকার অন্য একটি মিলের যাবতীয় মেশিনারি বিক্রি করে দেয়। মালিকপক্ষ মিলের স্থানে জুতার কারখানা করার চিন্তা করছে। প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মির্জা আবদুল জলিল গত ২০ মার্চ মিলটি পরিদর্শনে আসেন। এ সময় মিলের পরিচালকরা টেক্সটাইল মিল গ্যাস সংকটের কারণে চালু করা যাবে না জানিয়ে 'সু' ফ্যাক্টরি স্থাপন করার জন্য চেয়ারম্যানের অনুমতি চান। তিনি পরিচালকদের সাফ জানিয়ে দেন, চুক্তি মোতাবেক তাদের টেক্সটাইল মিলই চালু করতে হবে, অন্য কিছু নয়। চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা পাটোয়ারী জানান, মিলটি চালু হবে_ এ আশায় শ্রমিক ও তাদের পরিবার তাকিয়ে রয়েছে। তিনি মিলটি চালু করে এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। যোগাযোগ করা হলে নোয়াখালী টেক্সটাইল মিলের অন্যতম শেয়ারহোল্ডার আক্তার হোসেন চৌধুরী বলেন, পর্যাপ্ত কাঁচামাল সংকট ও গ্যাস ব্যবস্থা না থাকায় এটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে

 

Copyright © 2009 by Your News, Your Site and Mirror Of Lakshmipur,